BD Yellow Pages

নন্দন পার্ক


বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে নন্দন পার্ক একটি অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে সব ধরনের দর্শনার্থীদের কাছে স্বীকৃতি লাভ করেছে। নন্দন গ্রুপ এবং ভারতের বৃহত্তম পার্ক পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নিকো পার্কস এন্ড রিসোর্টস লিমিটেডের সঙ্গে যৌথ উদ্দ্যোগে এই পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। রাজধানী ঢাকার সন্নিকটে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কে বিকেএসপি এবং চন্দ্রার মাঝামাঝি সাভারের বাড়ইপাড়ায় ৬০ বিঘা জায়গা নিয়ে এ পার্ক অবস্থিত। নন্দন পার্ক দর্শনার্থীদের মনের আবেগ, অনুভূতি ও চাহিদা উপলব্ধি করে সংযোজন করেছে নিত্য নতুন রাইড। এরই ধারাবাহিকতায় নন্দন পার্ক এ্যডভেঞ্চার জোনে সংযোজন করেছে রোমাঞ্চকর ও দুঃসাহসিক রাইডগুলো, যা বর্তমানে যুগের উদ্দ্যমী ও প্রাণচঞ্চল তরুন-তরুণীদের কাছে এক আনন্দপূর্ণ ও আকর্ষণীয় রাইড হিসাবে সুপরিচিতি লাভ করেছে। এসব রাইডে আরোহণের জন্য রয়েছে যথেষ্ট নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা। নন্দন পার্কে ঢুকলেই বসন্তকালীন ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হতে হয়। তারপর পায়ে পায়ে হেতে গেলে চমৎকার ছিমছাম পরিবেশে বড় একটি টাওয়ার চোকে পড়বে। অটাই এ্যাডভেঞ্চার জোন। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে এই এ্যাডভেঞ্চার জোন তৈরি করা হয়েছে। এ্যাডভেঞ্চার জোনে রয়েছে ৫টি রাইড। রাইডগলোর নাম হলোঃ জিপ রাইড, রক ক্লাইম্বিং জ্যাপলিং, চ্যালেঞ্জ কোর্স এবং অবস্ট্যাকল কোর্স। এর মধ্যে প্রথম ৪টি রাইড বড়দের জন্য এবং শেষোক্ত রাইডটি ৫ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের জন্য। ১. জিপ রাইড : ৪৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট টাওয়ার থেকে প্রায় ৫৫০ ফুট দূরত্বে ৪৫ ডিগ্রি স্লোপে ১৪ মি.মি. স্টিল ওয়ারের সাহায্যে ল্যান্ডিং পয়েন্টে বা ভূমিতে অবতরণ করতে হয়। এটি একটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় রোমাঞ্চকর রাইড। ২. রক ক্লাইম্বিং : এই রাইডটি ৪৫ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট ৯০ ডিগ্রি খাড়া একটি টাওয়ারের সাথে পাথর দিয়ে পর্বতাকৃতি করে তৈরি করা হয়েছে। ঐ পর্বতের গায়ে কৃত্রিম পাথর বেয়ে পর্বতারোহন করতে হবে এই দুঃসাহসিক খেলায়। আরোহণকারীর নিন্ম পতন রোধের জন্য রয়েছে বিশেষ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ৩. জ্যাপলিং : বর্তমান প্রযুক্তির যুগে জ্যাপলিং একটি সহজ ও আনন্দদায়ক রাইড। এটাও ৪৫ ফুট উঁচু টাওয়ারের ওপর থেকে টাওয়ারের খাড়া গা বেয়ে বেয়ে স্ট্যাটিক রোপের সাহায্যে কৃত্রিম পাথরে জ্যাপলার পা দুটি একসঙ্গে কাধ বরাবর বাঁকা করে এবং হাটু দুটি ৯০ ডিগ্রি সোজা করে টাওয়ারের গায়ে জোরে ধাক্কা মেরে পিছনে যাবে এবং একই সময়ে হাতের মধ্যে স্ট্যাটিক রোপ রিলিজ করে নিচে অবতরণ করতে হবে এই দুঃসাহসিক খেলায়। ৪. চ্যালেঞ্জিং কোর্স : এটা এ্যাডভেঞ্চার জোনের আরো একটি দুঃসাহসিক ও রোমাঞ্চকর রাইড। এই রাইডটি বার্মা ব্রিজ, প্লাংক পেন্ডুলাম, প্যারালাল রোপ এবং হর্স পেন্ডুলামের সমন্বয়ে গঠিত। প্রতিটি রাইডের উচ্চতা ১৮ ফুট এবং দৈর্ঘ্য ২৪ ফুট। ৫. অবস্ট্যাকল কোর্স : এই রাইডটি সম্পূর্ণভাবে ৫ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের জন্য। এই রাইডটি উপভোগ করার সময় রাইডের নিরাপত্তার জন্যে অভিভাবক সঙ্গে থাকবেন এবং নিরাপত্তা বিধান করবেন। মাত্র ৬০ টাকার টকিটের বিনিময়ে এই রাইডগুলো উপভোগ করা যাবে। এ রাইডগুলোর ব্যবহারের নিয়মনীতি ও নিরাপত্তা নীতি কঠোরভাবে মেনে চললে দুর্ঘটনার কোন অবকাশই থাকবে না। অ্যাডভেঞ্চার রাইড, ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, ওয়াটার কোস্টার, ক্যবল কার, আইসল্যান্ড, টাইটানিকসহ এ পার্কে রয়েছে বিশ্বমানের ২৮টি রাইড। দুইভাবে নন্দন পার্কে যাওয়া যায়। ধাকা-সাভার-নবীনগর-চন্দ্রা রুটে অথবা ধাকা-আশুলিয়া-চন্দ্রা রুটে নিজস্ব পরিবহনে অথবা পার্কের তত্ত্বাবধানে ধাকা-চন্দ্রা রুটের সুপার বাস, হানিফ, মেট্রো এবং মঞ্জিল পরিবহনে যাওয়া যায় নন্দন পার্কে। সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ৯তা পর্যন্ত, শনিবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার ও অন্যান্য সরকারি ছুটির দিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত খোলা। এ পার্কে বাইরের কোনো খাবার নিয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। রুচিসম্মত, পরিস্কার আর স্বাদে ভরা পছন্দের সব ধরনের দেশি ও বিদেশি খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে নন্দন পার্কে। পার্কে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬০ টাকা। শুধুমাত্র ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের ফি ২৫০ টাকা এছাড়া প্রতিটি রাইডের জন্য রয়েছে বিভিন্ন মুল্যের আলাদা টিকিটের ব্যবস্থা। রাজধানীর আশেপাশে যারা বেড়াতে যেতে চান তারা চলে যেতে পারেন সাভারের নন্দন পার্কে।