BD Yellow Pages

বোটানিক্যাল গার্ডেন (Botanical Garden)


১৯৬২ সালে (বাংলা ১৩৭৫ সাল) ঢাকার মিরপুরে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের অর্থাৎ (বোটানিক্যাল গার্ডেন নামে জার বর্তমান পরিচিতি) স্থাপনার কাজ শুরু হয়। স্বাধীন দেশের মাতিতে দেশের একমাত্র উদ্ভিদ উদ্যানটি যাতে পূর্ণাঙ্গ অর্থেই একটি পরিপূর্ণ বোটানিক্যাল গার্ডেনের মর্যাদা পায়। ’৭০ এর দশকেই জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের আন্তর্জাতিক সেকশনে (সেকশন নং-৮ ও ১০) বিদেশি গাছের বীজ, চারা সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়। ছড়িয়ে থাকা জলাধারসমূহে বিচিত্র সব শাপলার সংগ্রহ, পদ্মা-পুকুর, ভেষজ উদ্ভিদের বাগান, বাঁশবাগান, গোলাপ বাগান ইত্যাদি স্থাপনার কাজসহ অন্যান্য দুস্প্রাপ্য বিরল উদ্ভিদের সংগ্রহ কাজ শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে ১৩৭.৬৫ হেক্টর (৩৪০ একর) জায়গার উপর উদ্ভিদ উদ্যানটি গঠিত হওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমানে ৮৪.২ হেক্টর (২০৮ একর) জায়গায় ৫৭টি সেকশনে প্রায় ৫৬০০০ উদ্ভিদ সংগ্রহ, সংরক্ষণ করা হয়েছে। ১৫৫তি উদ্ভিদ পরিবারভুক্ত, ৯০৮টি প্রজাতির গাছপালা নিয়ে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান (ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন) এখন একটি জীবন্ত সংগ্রহশালা। এখানে ২৫৫টি প্রজাতির ২৮২০০টি বৃক্ষ, ৩১০টি প্রজাতির ৮৪০০টি গুল্ম, ৩৮৫টি প্রজাতির ১০৪০০টি জাতীয় গাছ আছে। এছাড়া জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানে প্রায় ৬০ প্রজাতির বিরল ও বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের সংগ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে বাঁশপাতা, চন্দন, রাজা অশোক, ক্যামেলিয়া, আমাজান লিলি, আগর, রামবুতাম, তমাল, ভূর্জ্জপত্র, উদল, স্তারকুলিয়া, ক্যাকটাস, অর্কিড অন্যতম। ন্যাশনাল বটানিক্যাল গার্ডেনে উদ্ভিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীদের প্রাকৃতিক শোভা উপভোগ করার কথা চিন্তা করে এ উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে আঁকাবাঁকা কৃত্রিম লেক সৃষ্টি করা হয়েছে। লেকের মাঝখানে রয়েছে কৃত্রিম দ্বীপ, তাতে বাহারি উদ্ভিদের বাগান তৈরি করা হয়েছে। দর্শনার্থীগণ উপভোগ করতে পারবেন সুদৃশ্য লাল গোলাপের বিশাল বাগান। রয়েছে কৃত্রিম জলপ্রপাত। লেকের উপর ব্রিজ সম্বলিত তিনটি ডেক রয়েছে। দর্শনার্থীরা ডেকে দাঁড়িয়ে লেক, চারপার্শ্বের প্রাকৃতিক দৃশ্য, কৃত্রিম জলপ্রপাত দেখার সুব্যবস্থা রয়েছে। শীতকালে ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেনে দেখতে পাওয়া যায় হাজার হাজার অতিথি পাখি। মনে হবে যেন, কোনো পাখির মেলায় বসে আছি। গুলিস্থান থেকে বিআরটিসি বাসসহ আরো অনেক বাস পাবেন। মতিঝিল থেকেও বিআরটিসি, আজমেরী, পাঞ্জেরীসহ বেশ কয়েকটি বাস আছে মিরপুর বোটানিক্যাল গার্ডেন যাবার জন্য। প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা, অপ্রাপ্তদের ২ টাকা এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ৩ টাকা। ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গারডেনের পাশেই হলো জাতীয় চিড়িয়াখানা। ইচ্ছা হলে প্রকৃতির উদ্ভিদের সাথে বন্যপ্রাণীও দেখে আসতে পারেন। বলতে পারেন, কলা বিক্রি এবং রথ দেখা-একই সঙ্গে হলো। বোটানিক্যাল গার্ডেন রোববার বন্ধ থাকে।