সংসদ ভবন (National Parliament house)
জাতীয় সংসদ ভবন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রধান ভবন। এটি ঢাকার শেরে-বাংলানগর এলাকায় অবস্থিত। প্রখ্যাত মার্কিন স্থপতি লুই আই কান এটির মূল স্থপতি। ইতিহাস বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত অনুস্থিত সংসদ নির্বাচনের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনের পর গঠিত সংসদের অধিবেশনগুলি অনুষ্ঠিত হয় পুরনো সংসদ ভবনে, যা বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ততকালীন পাকিস্তান সরকার পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) ও পশ্চিম পাকিস্তানের (বর্তমান পাকিস্তান) জন্য আইনসভার জন্য জাতীয় সংসদ ভবনের কাজ শুরু হয় ১৯৬১ সালে। ১৯৮২ সালের ২৮শে জানুয়ারি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর একই বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদের অষ্টম (এবং শেষ) অধিবেশনে প্রথম সংসদ ভবন ব্যবহৃত হয়। তখন থেকেই আইন প্রণয়ন এবং সরকারি কর্মকান্ড পরিচালনার মূল কেন্দ্র হিসাবে এই ভবন ব্যবহার হয়ে আসছে। স্থাপত্যশৈলী ও নকশা লুই কান কমপ্লেক্সের অবশিষ্ট অংশের ডিজাইন করেন। জাতীয় সংসদ ভবন জতীয় সংসদ কমপ্লেক্সের একটি অংশ। কমপ্লেক্সের মধ্যে আরো আছে সুদৃশ্য বাগান, কৃত্তিম হ্রদ এবং সংসদ সদস্যদের আবাসস্থল। অবস্থান ঢাকার শেরে-বাংলা নগরে অবস্থিত জাতীয় সংসদ কমপ্লেক্সকে ঘিরে রয়েসে চারটি প্রধান সড়কঃ উত্তর দিকে লেক রোড; পূর্ব দিকে রোকেয়া স্মরণী; দক্ষিন দিকে মানিক মিয়া এভিনিউ এবং পশ্চিম দিকে মিরপুর রোড; ফলে সংসদ অধিবেশন চলাকালে যানবাহন চলাচল ও সহজে চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভবপর হয়। মূল ভবনটি (সংসদ ভবন) মূলতঃ তিন ভাগে বিভক্তঃ মেইন প্লাজা (The main plaza): ৮২৩,০০০ বর্গফুট (৭৬,০০০ বর্গমিটার) সাউথ প্লাজা (South plaza): ২২৩,০০০ বর্গফুট (২১,০০০ বর্গমিটার) প্রেসিডেন্সিয়াল প্লাজা (presidential plaza): ৬৫,০০০ বর্গফুট (৬,০০০ বর্গমিটার) মূল ভবনটি কমপ্লেক্সের কেন্দ্রে অবস্থিত। এমপি হোস্টেল এবং জরুরী কাজে ব্যবহৃত ভবনসমূহ কমপ্লেক্সের বহির্ভাগে অবস্থিত। মূল ভবন ঘিরে অবস্থিত কৃত্তিম হ্রদ, দুটি বাগান এর মাঝের শুণ্যস্থান পূরণ করেছে। স্থাপত্য দর্শন এই স্থাপনার স্থাপত্য দর্শনের মূলে ছিল স্থানের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং স্থাপত্যশৈলীর মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তোলা। প্রকৃতির বিভিন্ন প্রতিকূলতার বিরুধ্যে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রামকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে স্থাপত্যশৈলী দ্বারা। মূল ভবনের নকশা মূল ভবনটি নয়টি পৃথক ব্লক দিয়ে তৈরীঃ মাঝের অষ্টভুজ ব্লকটির উচ্চতা ১৫৫ ফুট এবং বাকি আটটি ব্লকের উচ্চতা ১১০ ফুট। প্রতিটি ব্লকের জাইয়গাকে বিভিন্ন কাজের ভিত্তিতে ভাগ করা হয়েছে, করিডোর, লিফট, সিঁড়ি ও বৃত্তাকার পথ দিয়ে আনুভূমিক ও উলম্বিকভাবে ব্লকগুলোর মাঝে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। পুরো ভবনটির নকশা এমনভাবে প্রনয়ণ করা হয়েছে যাতে সব ব্লকগুলোর সমন্বয়ে একটি ব্লকের অভিন্ন স্থান হিসাবে ব্যবহার করা যায়। দ্বিতীয় তলার একটি লাগোয়া ব্লকে প্রধান কমিটির রুমগুলো রয়েচে। সকল ধরনের সংসদীয় কার্যক্রম, মন্ত্রি, চেয়ারপারসন এবং স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে এই ভবনে। একই ভবনে সংসদীয় সচিবের জন্যেও কিছু অফিস বরাদ্দ রয়েছে। এটির খোলা ও বন্ধ থাকার নির্দিষ্ট ব্যপার নেই। আপনি বাইরে থেকে একে পর্যবেক্ষণ করতে পারলেও এর গন্ডির ভেতর প্রবেশাধিকার পুরোপুরি সংরক্ষিত, ফলে এর ভেতর ঢুকে আপনার পক্ষে একে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবেনা। সাউথ প্লাজা মাঝে মাঝে উন্মুক্ত করা হয় দর্শকদের জন্য। তাই ভাগ্য ভালো হলে আপনি এর মাঠে একটু বসা বা ঘোরাফিরা করতে পারবেন বা ঝালমুড়ি খেতে পারবেন।